মোবাইল হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানুন

মোবাইল চোরকে ধরার উপায়আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলের তুলে ধরেছি মোবাইল হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম। অনেকেই মনে করেন যে জিডি করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয় সেই কারণে তারা জিডি করানো থেকে দূরে থাকেন। এটি একেবারেই ভুল ধারণা। আর আপনাদের সেই ভুল ধারণা কাটানোর জন্যই আমরা মোবাইল হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম আর্টিকেলটি লিখেছি।
মোবাইল হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম

তাই জিডি করতে গিয়ে কোনরকম ঝামেলার সম্মুখীন হতে না চাইলে জিডি করার পূর্বেই আমাদের আর্টিকেল মোবাইল হারিয়ে গেলে জেরি করার নিয়ম বিস্তারিতভাবে পড়ুন। এতে করে আপনাদের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।

মোবাইল হারালে করণীয়

মোবাইল ফোন আমাদের অতি প্রয়োজনীয় এবং প্রতি গোপনীয় একটি পদার্থ। আমাদের জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় নাম্বার থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম পার্সোনাল ছবি এই মোবাইল ফোনে আবদ্ধ থাকে। এখন এমন একটি সময় এসেছে যেখানে আমরা মোবাইল ফোন ছাড়া অচল বলতে পারি। 
বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজ মোবাইল ফোন আমাদের কাছে খুব সহজ এবং দ্রুত করে তুলেছে। আর তাইতো যদি কোন কারণে এই মোবাইল ফোন হারিয়ে যায় অথবা চুরি হয়ে যায় তাহলে আমাদের মাথায় নেমে আসে চিন্তার বোঝা। মোবাইল ফোন হারানোর পরে কিছু করণীয় রয়েছে আপনি যদি সেই সকল করণীয় সঠিক সময়ে এবং সঠিক নিয়মে পড়তে পারেন তাহলে আপনার প্রয়োজনীয় মোবাইল ফোনটি ফেরত পেতে পারেন। 

যদি সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি না করতে পারেন তাহলে আপনার ব্যবহৃত মোবাইল কোনটি পাওয়ার আশা ছেড়ে দিতে হবে। এখন জেনে নিন কোন সকল করনীয় যা মোবাইল হারালে আপনাদেরকে প্রথমে করতে হবে।
  • প্রথমে আপনার হারানো মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত সিমটি বন্ধ করে দিতে হবে।
  • এরপর আপনার যা কাজ হবে তা হচ্ছে যেই স্থানে মোবাইল ফোন হারিয়েছে সেই স্থানের আশেপাশের কোন পুলিশ স্টেশনে গিয়ে জিডি করতে হবে।
  • মনে রাখবেন স্টেশনে জিডি করতে যাওয়ার সময় অবশ্যই মোবাইল ফোন ক্রয় করার সময় যে রশিদ দিয়েছিল সেই রশিদ নিয়ে যেতে হবে।
  • এছাড়াও যেই সিম ব্যবহার করতেন সেই সিমের রেজিস্ট্রেশন এর ডকুমেন্ট প্রয়োজন পড়বে।
উপরোক্ত কাজগুলো করতে হবে। আর কাজগুলো অবশ্যই মোবাইল হারানোর পর যত দ্রুত সম্ভব পড়তে হবে খুব বেশি দেরি করা যাবে না। যত বেশি দেরি করবেন মোবাইল ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি কমে যাবে।

হারানো মোবাইল বন্ধ করার উপায়

আমরা আমাদের আর্টিকেলের উপরের অংশে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি যে মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে আপনাকে কি কি করনীয় গুলো করতে হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপ হচ্ছে ব্যবহৃত সিমটি বন্ধ করে দেয়া। এখনো হয়তো এই কথাটি শুনে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে কিভাবে হারানো মোবাইল বন্ধ করবেন। 
অনেক কম মানুষ রয়েছে যারা এই সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য জানেন। আপনাদের জানার সুবিধার্থে আমরা এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরব হারানো মোবাইল বন্ধ করার কিছু উপায়। যে সকল উপায় এর মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই আপনার হারিয়ে যাওয়া মোবাইলটি বন্ধ করতে পারবেন এবং নিশ্চিত থাকতে পারবেন যে সেই মোবাইল ফোন দিয়ে আপনার কোন রকম ক্ষতি করা সম্ভব হবে না।

মোবাইল ফোন বন্ধ করতে হলে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে নিকটস্থ কোন কম্পিউটারের দোকানে। সেন্ট্রাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার যাকে সংক্ষিপ্তভাবে বলা হয়ে থাকে CEIR এটি একটি ওয়েবসাইট যেই ওয়েবসাইট এর সাহায্যে আপনি আপনার হারিয়ে যাওয়া মোবাইলটি বন্ধ করতে পারবেন। 

অন্য কোন ওয়েবসাইটে গিয়ে বিভ্রান্ত না হয়ে সরাসরি এই ওয়েবসাইটে যাবেন। এই ওয়েবসাইটে দেশের প্রতিটি মোবাইলের মডেল এবং IMEI নাম্বার থাকে। সেহেতু খুব সহজেই এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি আপনার হারিয়ে যাওয়া মোবাইলটি বন্ধ করতে পারবেন। 

এই ওয়েবসাইটে যাওয়ার পরে আপনার কাছে বেশ কিছু অপশন আসবে যে সকল অপশনে সঠিক অপশন গুলো আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে। এছাড়াও আপনার কাছে বেশ কিছু তথ্য চাইবে যেমন আপনার ফোন কেনার রশিদ, মোবাইল যেদিন হারিয়েছে তার তারিখ এছাড়াও কোথায় হারিয়েছে এবং আপনার জেলা, থানা ও পুলিশ স্টেশনে জিডি করেছেন সেই জিডির কমপ্লেন নাম্বার। 
এ সকল তথ্য ঠিকঠাকভাবে দেওয়ার পরে আপনার কাছে আরও কিছু তথ্য চাইবে সেই সকল তথ্যগুলো দিতে হবে। সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করা হলে আপনার কাছে একটি ওটিপি নাম্বার আসবে। সেটির মাধ্যমে যখন ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করা হবে তখন আপনার হারিয়ে যাওয়া মোবাইলটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।

অনলাইনে থানায় জিডি করার নিয়ম

অনেক সময় দেখা যায় যে আমাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এমন একটি স্থানে হারাই যে আমরা আশেপাশের কোন পুলিশ স্টেশনে গিয়ে জিডি করতে পারিনা। কিংবা আমাদের কাছে সেই সুযোগ অথবা সময় হয়ে ওঠে না। আপনার যদি এরকম সমস্যা হয় তাহলে এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। 

কারণ শুধুমাত্র পুলিশ স্টেশনে গিয়ে যে জিডি করা সম্ভব তা কিন্তু নয়। আপনি বাসায় বসেও অনলাইনে থানায় জিডি করতে পারবেন। অনলাইন এমন একটি ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে যা আমাদের কাজকে অনেক বেশি সহজ করে তুলেছে। 
অনলাইনের মাধ্যমে আমরা ঘরে বসেই সহজে যে কোন কাজ সম্পূর্ণ করতে সক্ষম। এখন হয়তো অনেকেই মনে মনে ভাববেন কিভাবে অনলাইনে থানায় জিডি করবেন। আপনাদের এই সমস্যার সমাধান করার জন্য আমরা অনলাইনে থানায় জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করেছি। অনলাইনে জিডি এটির পরিকল্পনা শুরু করা হয় ২০১৯ সালে। 

আর এটির পরীক্ষা করা হয় ২০২০ সালের জুন মাসে। সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত হয়ে ২০২২ সালের ২১ এর ব্যবস্থাটির উদ্বোধন করা হয়। আশা করছি আর্টিকেলের এই অংশটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পারবেন কিভাবে বাসায় বসেই থানায় জিডি করতে পারবেন।
  1. আপনার মোবাইলের প্লে স্টোর অপশন এ গিয়ে ইন্সটল করতে হবে অনলাইন জিডি নামের সফটওয়্যার।
  2. সফটওয়্যার টি ইন্সটল করার পর তাতে একটি পাসওয়ার্ড দিতে হবে এবং বিভিন্ন রকম শর্তাবলী আসবে সেগুলো পূরণ করতে হবে।
  3. সে সকল শর্তাবলী পূরণ করার মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।
  4. নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পর আপনাদের সামনে এক ধরনের ছক আসবে আর সেই ছকের ভেতর দিতে হবে তারা যে সকল তথ্য চাইবে সেই সকল তথ্য।
  5. আপনি যখন নিবন্ধন অপশনের ভেতর যাবেন তখন আপনার সামনে চারটি অপশন দেখা দিবে তার মধ্যে জাতীয় পরিচয় পত্রের অপশনে গিয়ে তার ভেতরে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার জন্মের তারিখ এবং জেলা, থানা, ইউনিয়ন এবং গ্রাম সম্পর্কে লিখতে হবে।
  6. এছাড়াও যেই স্থানে মোবাইল হারিয়েছে সেই সম্পর্কে বর্ণনা করতে হবে।
  7. এভাবেই আপনার মোবাইল হারানোর জিডি অনলাইনে এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
এখন হয়তো অনেকের মনেই সন্দেহ জাগতে পারে যে অনলাইনে জিডি করে কি কোনরকম সুবিধা পাওয়া যাবে। এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা বলব যে অবশ্যই অনলাইনে জিডি করলেও আপনারা সঠিক সেবা পাবেন। তাই আপনারা নিঃসন্দেহে অনলাইনে জিডি করতে পারবেন।

মোবাইল হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম

আপনাদের কোনভাবে যদি মোবাইল ফোন হারিয়ে যায় অথবা চুরি হয়ে যায় তাহলে বেশি দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ থানায় গিয়ে জিডি করতে হবে। কারণ চুরি হয়ে যাওয়া মোবাইল পেতে হলে অবশ্যই জিডি করা জরুরী। আপনি যদি জিডি না করেন তাহলে সেই ফোন ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। 

আপনি যদি থানায় গিয়ে জিডি করেন তাহলে তারা বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং আপনার হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনটি খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। মোবাইল হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে আমরা নিম্নে আলোচনা করলাম।
  • থানায় গিয়ে কর্মরত অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
  • তাকে বিস্তারিতভাবে বলতে হবে কোন স্থানে এবং কিভাবে আপনার মোবাইল ফোনটি হারিয়ে গেছে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র যেমনঃ মোবাইল ফোনের রশিদ, ফোনের IMEI নাম্বার, মোবাইল ফোনের সিম নাম্বার, জন্ম নিবন্ধন পত্রের ফটোকপি ইত্যাদি জমা দিতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর কর্মরত অফিসার আপনার জিডিটি লিপিবদ্ধ করবেন।
  • আপনার যখন জিডি করা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে তখন আপনাকে একটি জিডি নাম্বার দেবেন সেটি আপনাকে ভালোভাবে নিজের কাছে রেখে দিতে হবে।

মোবাইল চুরি হলে খুঁজে পাওয়ার উপায়

মোবাইল ফোন আমাদের নিত্য জীবনের একটি প্রয়োজনীয় পণ্য। মোবাইল ফোন ছাড়া মানুষ অনেকটাই অচল বলা যেতে পারে। কেননা দূরবর্তী মানুষের সাথে কথা বলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম ছবি কিংবা তথ্য দিয়ে পাঠানো সকল কাজ খুব সহজেই মোবাইল ফোনের সাহায্যে সম্পন্ন করা যায়। মানুষের জীবনে এমন কোন দিন নেই যেই দিনে মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। 

কোন না কোন কারণে আমরা প্রতিদিন প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আসছি। বিভিন্ন খবরাখবর জানা থেকে শুরু করে শোনানো পর্যন্ত মোবাইল ব্যবহার করে থাকি। এছাড়াও আমাদের জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কিংবা ছবি আমরা মোবাইলের মাধ্যমে সেভ করে রাখি। আর যখন এই মোবাইল ফোন আমাদের কাছ থেকে চুরি হয়ে যায় তখন শুরু হয় বিভিন্ন রকম চিন্তা। 

তাই আমরা যে কোন স্থানে যাতায়াতের সময় মোবাইল ফোনটি অনেক সতর্কর সাথে ব্যবহার করি। তাও অনেক সময় মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়। এখন যদি আপনার মোবাইল ফোনটি চুরি হয় তাহলে আপনি সেই মোবাইলটি কিভাবে খুঁজে পাবেন আমরা তা নিয়েই আলোচনা করব।

খুঁজে পাওয়ার উপায়ঃ বর্তমান সময়ে বিভিন্ন রকম উন্নত সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে যে সকল সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার মোবাইলটি খুঁজে বের করতে পারবেন। আপনার মোবাইলে প্লে স্টোর থেকে ফাইন্ড মাই ডিভাইস অ্যাপটি ইন্সটল করে রাখতে হবে। এটি মোবাইল ট্র্যাকিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ। 

ইন্সটল করা হয়ে গেলে আপনার জিমেইল একাউন্ট দিয়ে অ্যাপের ভেতরে লগইন করতে হবে। লগইন করার পর বিভিন্ন রকম ইনফরমেশন চাইবে সে সকল ইনফরমেশন আপনাকে সঠিকভাবে দিতে হবে। এই অ্যাপের ভেতরে রয়েছে একটি এলার্ট সিস্টেম যেই এলার্ট সিস্টেম আপনাকে চালু করে রাখতে হবে। আপনার যদি কোন ভাবে মোবাইল ফোন হারিয়ে যাই তাহলে সেই ফোন অন করার সাথে সাথে এই এলার্মটি শুরু করবে। 

আপনার নিজের ফোনের পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্যদের ও ফোন ট্র্যাক করতে পারবেন এটির সাহায্যে। যার ফোন ট্রাকিং করতে চান তার জিমেইল নাম্বার অ্যাড করতে হবে। কিভাবে যদি আপনার মোবাইলে এই অ্যাপটি ইন্সটল করে রাখেন তাহলে সেই ফোনটি হারিয়ে যাওয়ার পর খুব সহজেই খুঁজে বের করতে পারবেন।

শেষ কথা

আমরা এতক্ষণ আপনাদের সামনে মোবাইল হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছি। আশা করছি সে সকল তথ্যগুলো আপনাদের উপকারে আসবে। আমাদের এই আর্টিকেলটি লিখার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মোবাইল হারিয়ে যাওয়ার পর যেন আপনারা সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করেন এবং আপনার ফোনটি খুঁজে পান। 

এছাড়াও যদি মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়া সম্পর্কে আপনাদের কোন তথ্য জানার থাকে তাহলে আমাদেরকে হোয়াটসঅ্যাপে অথবা কমেন্টে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আমরা আপনাদের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করব।

''ধন্যবাদ''

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url