বিদেশ থেকে পার্সেল আনার নিয়ম যা ১০০% সঠিক
ওমানের ১০০ রিয়াল বাংলাদেশের কত টাকাআজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলটি বিদেশ থেকে পার্সেল আনার নিয়ম সম্পর্কে তথ্য দিয়ে
সাজিয়েছি। আপনারা যদি কোন পার্সেল বিদেশ থেকে আনাতে চান তাহলে কোন কোন নিয়মে
আনাবেন কিভাবে আনাবেন সেই সম্পর্কে বিদেশ থেকে পার্সেল আনার নিয়ম আর্টিকেলটি পড়ে
খুব সহজেই বুঝতে পারবেন। আমরা আমাদের আর্টিকেল বিদেশ থেকে পার্সেল আনার নিয়ম এর
ভেতর আপনাদের জন্য বিস্তারিতভাবে সব তথ্য তুলে ধরেছি।
আশা করছি আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা বিদেশ থেকে পার্সেল আনার সম্পর্কে অনেক কিছুই
জানতে পারবেন।
ভূমিকাঃ বিদেশ থেকে পার্সেল আনার নিয়ম
আমাদের পরিচিত কেউ যদি বিদেশে যায় কিংবা জানতে পারি যে কোন ব্যক্তি বিদেশ থেকে
আসছে তাহলে আমরা অনেকেই সেই ব্যক্তিকে একটি লম্বা লিস্ট ধরিয়ে দেই বিদেশ থেকে
আনার জন্য। কারণ আমাদের দেশে বিদেশি প্রোডাক্টের প্রতি আগ্রহ একটু বেশি দেখা
যায়। তাই তো কেউ আসলে বিভিন্ন রকম প্রোডাক্ট আনার কথা বলে থাকি।
আরও পড়ুনঃ রোমানিয়ার ১ ইউরো বাংলাদেশের কত টাকা
কিন্তু বিদেশ থেকে সেই প্রোডাক্টগুলো নিয়ে আসতে বিভিন্ন রকম ঝামেলার সম্মুখীন
হতে হয়। কারণ যেকোনো প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে নিয়ে আসতে হলে বিভিন্ন রকম
নিয়ম-কানুন মেনে নিয়ে আসতে হয়। এমনি এমনি কোন প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে নিয়ে আসা
যায় না।
তাই আপনি যদি বিদেশ থেকে কোন জিনিস নিয়ে আসতে চান তাহলে প্রথমে আপনাকে সেই সকল
নিয়ম-কানুন সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে। কারণ আপনি যদি সেই সকল নিয়মকানুন
সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে করতে পারেন বড় ধরনের ঝামেলার মুখে।
বিদেশ থেকে পার্সেল আনার নিয়ম
বিদেশ থেকে বিভিন্ন রকম পণ্য আনার ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তিকে পড়তে হয় অনেক সমস্যার
মুখে। এরকম সমস্যার মুখে পড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে সঠিক নিয়ম না জানা। তাই তো
আপনি যদি চান কোন পণ্য বিদেশ থেকে নিয়ে আসবেন তাহলে প্রথমে আপনাকে বিদেশ থেকে
পার্সেল আনার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।
আমরা আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদের সামনে সঠিক নিয়ম গুলো তুলে ধরার চেষ্টা
করেছি। আশা করছি আপনারা খুব সহজেই বুঝতে পারবেন।
সঠিক নিয়মঃ আপনি যদি বিদেশ থেকে কোন পার্সেল নিয়ে আসতে চান তাহলে
প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে সেই পার্সেলের ওজন এবং আকারের উপর। কারণ আপনি চাইলেই যত
ইচ্ছা তত প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে নিয়ে আসতে পারবেন না। যে কোন জায়গা থেকে পণ্য
নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ওদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ঠিক করে দেওয়া থাকে।
আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণ এর ভেতর প্রোডাক্ট নিয়ে আসতে হবে। পার্সেল আনার
ক্ষেত্রে আপনি যেই প্লেন এ আসবেন সেই প্লেনের কিছু নির্দিষ্ট পলিসি থাকে। আপনাকে
অবশ্যই সেই পলিসি গুলো তাদের পার্সোনাল ওয়েবসাইটে গিয়ে জেনে নিতে হবে। তাছাড়াও
ওদের সাথে কথা বলতে হবে যে আপনি কতটুকু পণ্য নিয়ে যেতে চাইছেন।
পার্সেল প্যাকেজিং করার ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিতে হবে। আপনি যেই প্রোডাক্টগুলো
নিয়ে আসবেন সেই প্রোডাক্টগুলোর প্যাকেজিং হতে হবে শক্ত। কারণ আপনার প্রোডাক্ট এর
প্যাকেজিং যদি শক্ত না হয় তাহলে আপনার প্রোডাক্ট ভেঙে যাওয়া এবং নষ্ট হয়ে
যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আপনার পার্সেল এর উপর অবশ্যই একটি কাস্টম ফর্ম লাগাতে হবে সেই ফর্মে পার্সেল
সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য এবং সঠিক ঠিকানা দিতে হবে। এরপরে আপনাকে যা করতে হবে তা
হচ্ছে আপনার পার্সেলটি নিয়ে আসার জন্য দুইটি অপশন থাকবে একটি হচ্ছে কার্গো
আরেকটি হচ্ছে কুরিয়ার এ দুটির মধ্যে একটি বাছাই করে নিতে হবে।
আপনার পার্সেলটি যদি ছোটখাটো হয় তাহলে আপনি কুরিয়ার অপশনটি বেছে নিতে পারেন আর
যদি আপনার পার্সেলটি বড় ধরনের হয়ে থাকে তাহলে কার্গো অপশনটি বেছে নিতে হবে।
এরপরে আপনার পার্সেল টিকে নিয়ে যেতে হবে এয়ারলাইন অফিসে আর সেখানে গিয়ে আপনার
পার্সেল এর ওজন অনুযায়ী তাদেরকে টাকা প্রদান করতে হবে।
এয়ারলাইন অফিসে যাওয়ার পর তারা একটি ফর্ম দেবে সেই ফর্মটি ফিলাপ করতে হবে। সেই
ফর্মটি ফিলাপ করার পর আপনাকে একটি ট্র্যাক আইডি দেওয়া হবে। এই ট্র্যাক আইডি
দিয়ে আপনি আপনার পার্সেলটির লোকেশন ট্র্যাক করতে পারবেন।
বিদেশ থেকে কি কি আনা যাবে
আপনি বিদেশ থেকে পার্সেল দিয়ে পাঠাবেন এর মানে এই নয় যে আপনার যেটি ইচ্ছা আপনি
সেটি বিদেশ থেকে নিয়ে আসতে পারবেন। বিদেশ থেকে যেকোনো ধরনের পার্সেল নিয়ে আসার
ক্ষেত্রে থাকে বিশেষ কিছু নিয়ম। অবশ্যই যেকোনো পার্সেল আনার পূর্বে সেই নিয়ম
অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
কিছু নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট রয়েছে যে সকল প্রোডাক্ট আমরা বিদেশ থেকে নিয়ে আসতে
পারবো। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে সে জানে না যে বিদেশ থেকে কোন কোন প্রোডাক্ট
আনা যাবে আর কোন কোন প্রোডাক্ট আনা যাবে না।
এমন কোন প্রোডাক্ট নিয়ে আসে যা বিদেশ থেকে আনা যায় না আর সেই কারণে এয়ারপোর্টে
তার কাছ থেকে সেই প্রোডাক্টটি নিয়ে নেওয়া হয়। এতে করে অনেক ক্ষতি হয়। তাই তো
আমরা আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি বিদেশ থেকে কি কি আনা
যাবে। তাহলে জেনে নিন কি কি আনা যাবেঃ
বর্তমান সময়ে বিদেশ থেকে পণ্য আনার ক্ষেত্রে তিনটি পরিবর্তন এড করেছে।
পরিবর্তন তিনটি হচ্ছেঃ
- স্বর্ণের অলংকারের ক্ষেত্রে সংজ্ঞা সংযোজন।
- মুঠোফোন আনার ক্ষেত্রে সুবিধা সুনির্দিষ্ট।
- এছাড়াও সিগারেট আনার ক্ষেত্রে সুবিধা কিন্তু অবশ্যই ১২ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে বাতিল।
এছাড়াও যে সকল নিয়মে যেই যেই পণ্য আনা যাবে তা হচ্ছেঃ
- কোনরকম শুল্ক ছাড়াই ১০০ গ্রাম পর্যন্ত স্বর্ণ আনতে পারবে।
- নতুন নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যক্তি বিদেশ থেকে আসার সময় দুইটি মুঠোফোন যে কোন রকম শুল্ক ছাড়াই নিয়ে আসতে পারবেন। তিনটি ফোন ও নিয়ে আসতে পারবেন কিন্তু অবশ্যই একটি ফোনের জন্য শুল্ক প্রদান করতে হবে।
- যদি কোন ব্যক্তির বয়স ১২ বছরের কম হয় তাহলে সেই যাত্রীর স্বর্ণবার অথবা স্বর্ণের অলংকার নিয়ে আসতে পারবে না।
- যদি কোন ব্যক্তির বয়স যদি ১২ বছরের বেশি হয় তাহলে সেই ব্যক্তি ৬৫ কেজি ওজনের ব্যাগেজ যেকোনো ধরনের শুল্ক ছাড়াই নিয়ে আসতে পারবেন।
- যদি কোন ব্যক্তির বয়স ১২ বছরের কম হয় তাহলে সেই ব্যক্তি 40 কেজি ওজনের ব্যাগেজ যেকোনো ধরনের শুল্ক ছাড়াই নিয়ে আসতে পারবেন।
- ২৬ ধরনের পণ্য কোন রকম শুল্ককর ছাড়া আনা যাবে এবং শুল্ক কর পরিশোধ করার পর ১২ টি পণ্য আনা যাবে।
শুল্ক কর পরিষদ করে যেই ১২ ধরনের প্রোডাক্ট আনা যাবে তা হচ্ছেঃ
- ১১৭ গ্রাম স্বর্ণ
- একটি মুঠোফোন
- ৩০ ইঞ্চি টেলিভিশন
- ২০ তোলা রুপো বার
- ডিস এন্টেনা
- ওয়াশিং মেশিন
- হোম থিয়েটার
- রিফ্রেজেটার
- ক্যামেরা
- ঝাড়বাতি
- ক্লথ ড্রায়ার
- এয়ার গান তবে অবশ্যই মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে
শুল্ক ছাড়া যেই ২৬ টি প্রোডাক্ট আনা যাবে তা হচ্ছেঃ
- ১০০ গ্রাম স্বর্ণ
- ২০০ গ্রাম রূপোর অলংকার
- ওভেন
- ফ্যাক্স মেশিন
- ভিডিও ক্যামেরা
- ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ
- দুটো মুঠোফোন
- কম্পিউটার স্ক্যানার
- ১৯ ইঞ্চি পর্যন্ত এলসিডি মনিটর
- সিলিং ফ্যান
- প্রিন্টার
- রাইস কুকার
- ডিজিটাল ক্যামেরা
- ২৯ ইঞ্চি টেলিভিশন
- ভিডিও ক্যামেরা
- সেলাই মেশিন
- ১ কার্টন সিগারেট
পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে বিদেশে কিভাবে পণ্য পাঠাবেন?
আমরা আমাদের আর্টিকেল আর এই অংশে আপনাদের সামনে তুলে ধরব পোস্ট অফিসের মাধ্যমে
বিদেশে কিভাবে পণ্য পাঠাবেন। পোস্ট অফিসের সাহায্যে যেকোনো পণ্য যদি বিদেশে
পাঠানো যায় তাহলে যেকোনো অন্যান্য মাধ্যমের তুলনায় খরচটা অনেক কম হয়।
তাই অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে বিভিন্ন রকম কুরিয়ার সার্ভিসের পরিবর্তে পোস্ট
অফিসের মাধ্যমে বিদেশে পণ্য পাঠাতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। কিন্তু পোস্ট
অফিসের সাহায্যে ছোট ছোট আকারের পণ্য বিদেশে পাঠানো সম্ভব বড় ধরনের পণ্য পাঠানো
যায় না। এখন জেনে নিন পোস্ট অফিসের মাধ্যমে কিভাবে কোন পাঠাবেন।
- পোস্ট অফিসের সাহায্যে পণ্য পাঠাতে কাগজপত্র প্রয়োজন হয় নিজস্ব এন আইডি কার্ড, যিনি পাঠাবেন তার ঠিকানা এবং যার কাছে পাঠাবেন তার ঠিকানা।
- পোস্ট অফিসের সাহায্যে সর্বোচ্চ ২০ কেজি পরিমাণ পণ্য বিদেশে পাঠাতে পারবেন।
- পোস্ট অফিসের সাহায্যে আপনারা যেকোনো ধরনের বৈধ প্রোডাক্ট বিদেশে পাঠাতে পারবেন।
- পোস্ট অফিসে পাঠানোর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন যে সকল পণ্য ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পঁচে যায় এবং লিকুইট জাতীয় পণ্য পোস্ট অফিসে পাঠানো যায় না।
- পোস্ট অফিসে যে কোন প্রোডাক্ট পাঠানোর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৪০ থেকে ৫০ দিন পর্যন্ত সময় লাগে সর্বোচ্চ আড়াই থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সেটি নির্ভর করে কত দূরে পাঠাবেন।
- পোস্ট অফিসের মাধ্যমে প্রোডাক্ট পাঠাতে সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। পোস্ট অফিসের মাধ্যমে প্রোডাক্ট বিদেশে পাঠাতে অনেক কম খরচ হয়। সেটি নির্ভর করবে আপনি কোন দেশে প্রোডাক্ট পাঠাচ্ছেন।
- পোস্ট অফিসের সাহায্যে ১৮১ টি দেশে প্রোডাক্ট পাঠানো যায়।
- পোস্ট অফিসে গিয়ে কোন দেশে পাঠাবেন আর কতটুকু পণ্য পাঠাবেন এই বিষয়ে তাদের সাথে আলোচনা করলে আপনাদেরকে খুব সহজেই বুঝিয়ে দেবে।
লেখকের মন্তব্যঃ বিদেশ থেকে পার্সেল আনার নিয়ম
আশা করছি আপনারা আমাদের লেখা আর্টিকেল বিদেশ থেকে পার্সেল আনার নিয়ম পড়ার
মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে বিদেশ থেকে যদি কোন পণ্য আনতে চান তাহলে কোন কোন
বিষয়ের দিকে নজর রাখতে হবে এবং কোন কোন প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে আনতে পারবেন আর কোন
কোন প্রোডাক্ট আনতে পারবেন না। এছাড়াও জানতে পেরেছেন পোস্ট অফিসের সাহায্যে
কিভাবে বিদেশে পণ্য পাঠাবেন।
আমরা আমাদের আর্টিকেলে আপনাদের সুবিধার্থে বিদেশ থেকে পার্সেল আনার অল্প কিছু
তথ্য তুলে ধরেছি। এই বিষয়ে যদি আপনাদের আরো কিছু জানার থাকে আমাদেরকে কমেন্টের
মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আমরা দ্রুত আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা
করব।
''ধন্যবাদ''
দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url