রমজানে ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট কিভাবে তৈরি করবেন জানুন

রমজান মাস মুসলমানের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই মাস পার করা হয় রোজা রেখে। অনেকেই রোজা থেকে শরীরের ওজন ও নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। আপনি যদি রমজান মাসে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে অবশ্যই রমজানে ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট আর্টিকেলটি পড়ুন। রমজানে ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও রমজানে ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট কিভাবে তৈরি করবেন।
রমজানে ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
রমজান মাসে যদি মনে করেন আপনার ওজন টাকে একটু নিয়ন্ত্রণ করবেন এবং কমাবেন তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

রোজা রাখার ফজিলত

রোজা মানে আমরা সকলেই জানি সারাদিন কোন কিছু না খেয়ে আল্লাহর ইবাদতে কাটিয়ে দেওয়া। কিন্তু শুধুমাত্র যদি না খেয়ে সারাদিন কাটিয়ে দেই তাহলেই কিন্তু সেটিকে রোজা রাখা বলা যাবে না। অবশ্যই রোজা রাখতে হলে রোজা রাখার কিছু নিয়ম মেনে রোজা রাখতে হবে। 

রোজা মুসলমানদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রোজা থাকাকালীন সময়ে একজন ব্যক্তিকে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। এই কারণে অনেকে মনে করতে পারেন শরীরের ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু এটি একদম ভুল ধারণা রোজা থাকার কারণে কোন রকম শরীরের ক্ষতি হয় না। 

বরং রোজার রয়েছে অনেকগুলো ফজিলত। রোজা রাখার কারণে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকম উপকার হয়ে থাকে। জেনে নিন রোজা রাখার ফজিলত কি কি।

প্রথম ফজিলতঃ রোজা রাখার কারণে একজন ব্যক্তির অন্তরে থাকা হিংসা ও বিদ্বেষ দূর হয়ে যায়।(মুসনাদে আহমাদ, হাদিসঃ ২৩০৭০)

দ্বিতীয় ফজিলতঃ যদি কোন ব্যক্তি রোজা রাখে তাহলে সেই রোজাদার ব্যক্তির মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তাহালা এর কাছে মেশকের সুগন্ধীর থেকেও অধিকতর সুগন্ধময়।(বুখারী, হাদীসঃ ১৯০৪)

তৃতীয় ফজিলতঃ যদি কোন ব্যক্তি শুধুমাত্র আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি লাভের আশায় সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে রোজা রাখেন তাহলে সেই ব্যক্তি অতীতে যে সকল গুনাহ করেছে সে সকল গুনাহ হয়ে যাবে।(বুখারী, হাদিসঃ ১৮০২)

চতুর্থ ফজিলতঃ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে জান্নাতের ভেতর একটি বিশেষ দরজা রয়েছে যেই দরজার নাম হচ্ছে রায়য়ান। আর এই দরজা দিয়ে শুধুমাত্র রোজাদার ব্যক্তিরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন। রোজাদার ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তিকে এই দরজা দিয়ে কেয়ামতের দিন জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে না। রোজাদার ব্যক্তিদের এই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানোর পর এই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে।(বুখারী, হাদিসঃ ১৭৯৭)

পঞ্চম ফজিলতঃ যখন কোন ব্যক্তি ঈমানের সাথে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের আশায় রোজা রাখে এবং নিয়মিত তারাবি নামাজ পড়ে তখন সেই ব্যক্তি মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুর মত একেবারে নিষ্পাপ হয়ে যাই।(নাসাঈ, হাদিসঃ ২৫১৮)

ষষ্ঠ ফজিলতঃ একজন রোজাদার ব্যক্তিকে মৃত্যুর পর পরকালে শহীদ ও সিদ্দিকিন দের দলভুক্ত করা হবে।(সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিসঃ ৩৪২৯)

সপ্তম ফজিলতঃ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন যে রোজাদার ব্যক্তির রোজার প্রতিদান তিনি নিজে প্রদান করবেন। যেহেতু রোজাদার ব্যক্তি রোজা রাখেন শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় তাই আল্লাহ তায়ালা বলেছেন রোজার পুরস্কার তিনি নিজেই দেবেন।(বুখারী, হাদিসঃ ১৮৯৪)

রমজান মাসে কি খাবেন

রমজান মাস মানেই ইফতারি। আর এই ইফতারিতে কত কিনা থাকে। ফলমূল থেকে শুরু করে শরবত কিংবা যেকোনো ভাজাপোড়া। ইফতারি মানেই খাবারের সমাহার। পুরো দিন আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের আশায় খাবার থেকে বিরত থাকার পর ইফতারের সময় মনে হয় যেন অনেক কিছুই খেয়ে নেই। 

কিন্তু ইফতারের সময় আমাদের বুঝে শুনে খাওয়া উচিত। সারাদিন না খেয়ে থাকার কারণে ইফতারের সময় যদি অতিরিক্ত কিছু খাওয়া হয় তাহলে হতে পারে শরীরের অথবা পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যা। তাই অবশ্যই ইফতারিতে কি খাবেন আর কি খাবেন না সেই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। 

অনেকেই রমজান মাসে কি খাবেন এই বিষয়ে সতর্ক না থাকার কারণে পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। শরীরের ও হয় বিভিন্ন রকম ক্ষতি। রমজান মাসে কি খাবেন সেই সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে আপনাদের সামনে বর্ণনা করলাম।

খেজুরঃ রমজান মাসে অবশ্যই খাবারের প্রথম স্থান দখল করে খুরমা খেজুর। খুরমা খেজুর আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। খুরমা খেজুর আমাদের শরীরের শক্তি যোগাতে অনেক বেশি সাহায্য করে। খুরমা খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রন। 

যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। তাই অবশ্যই রমজান মাসে খাবারের তালিকায় খুরমা খেজুর রাখতে হবে। কিন্তু বাজারে আজকাল বিভিন্ন ধরনের ভেজাল যুক্ত খুরমা খেজুর পাওয়া যাচ্ছে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। তাই খুরমা খেজুর কেনার সময় বুঝে শুনে কিনতে হবে।

পানীয়ঃ রমজান মাসে খাবার তালিকায় অবশ্যই যেকোনো ধরনের পানীয় রাখতে হবে। তা হতে পারে ডাবের পানি অথবা স্যালাইনের পানি কিংবা কোন ধরনের শরবত। রমজান মাসের আমাদের শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে পানি সরবরাহ হয় না। 

প্রতিটি মানুষের শরীরের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পানির চাহিদা থাকে। অবশ্যই সেই পরিমাণ পানি শরীরে সরবরাহ করতে হবে। উপরের উল্লেখিত পানীয় গুলো দ্বারা আমাদের পানির চাহিদা অনেকটা পূরণ হয়। কিন্তু অবশ্যই মনে রাখতে হবে রোজা খোলার সাথে সাথেই অতিরিক্ত পরিমাণ পানি পান করা যাবে না।

ফল ও সবজিঃ রমজান মাসে খাবার তালিকায় ফল ও সবজি রাখা জরুরি। ফল ও সবজিতে রয়েছে ভিটামিন। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। সারাদিন না খেয়ে থাকার কারণে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকম পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। 

আর ফল ও সবজি খাওয়ার কারণে সেই ঘাটটি পূরণ হবে। ফল ও সবজি বলতে যে অতিরিক্ত দামি কোন ফল অথবা সবজি খেতে হবে তা কিন্তু নয়। আপনার সাধ্যের মধ্যে যে সকল ফল ও সবজি পারবেন সেই সকল খেতে হবে।

প্রোটিন যুক্ত খাবারঃ যে সকল খাবারের প্রোটিন রয়েছেন রমজান মাসে সে সকল খাবার খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করবেন। কিন্তু অবশ্যই প্রোটিন হতে হবে চর্বিহীন প্রোটিন। প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। তাই খাদ্য তালিকায় প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখুন। যেমন দই, মাছ, মুরগির মাংস, মটরশুটি ইত্যাদি।

ফাইবার যুক্ত খাবারঃ ফাইবার যুক্ত খাবার আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী তা আমাদের সকলের জানা। তাই অবশ্যই রমজান মাসে খাদ্য তালিকায় ফাইবার যুক্ত খাবার রাখার চেষ্টা করুন।

রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা

রোজা মানে মুসলমানদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মুসলমানরা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের আশায় এক মাস রোজা রাখেন। বিভিন্ন হাদিসে আমরা রোজার উপকারিতা এবং রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জেনেছি। 

বিভিন্ন হাদিসের পাশাপাশি বিভিন্ন বিজ্ঞানীগণ রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা সম্পর্কে খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। মুসলমানরা তো রোজা রাখেন এটাই আমাদের ধর্ম। কিন্তু এখন বিজ্ঞানের বিভিন্ন রকম প্রমাণের পর মুসলমান ধর্ম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের মানুষজন রোজা রাখার উপর বিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন। যেমন খ্রিষ্টানের এক নারী ১২ বছর ধরে মুসলমান না হওয়ার সত্বেও রোজা রাখেন। 

যার নাম হচ্ছে জেরামি উমালি। তিনি মুসলমান না হয়েও রোজা রাখার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে রোজা রাখছেন। তাই নিঃসন্দেহে বলতে পারি রোজা রাখলে তা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় বরং উপকারী। আমি এখন আপনাদের সামনে রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা গুলো তুলে ধরবো।

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য আমরা অনেকেই কত কিনা করে থাকি। ডায়েট থেকে শুরু করে শরীর চর্চা পর্যন্ত। অনেক সময় দেখা যায় এ সকল কিছু করার পরেও কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না। কিন্তু মুসলমানদের ক্ষেত্রে একটি বড় সুবিধা হচ্ছে রোজা। 

কোন ব্যক্তি যদি সঠিক নিয়মে রোজা রাখেন তাহলে অবশ্যই তার অতিরিক্ত ওজন কমে আসবে। রমজান মাসে অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য আপনি রমজানে ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট তৈরি করতে পারেন। এতে করে খুব সহজেই আপনার অতিরিক্ত ওজন কমে আসবে।

মস্তিষ্ক বুড়ো হওয়া থেকে রক্ষাঃ আমেরিকার নিউরোসায়েন্টিস্ট ড. মার্ক ম্যাটসন জানান যে যখন কোন ব্যক্তি রোজা রাখেন অথবা সকল ধরনের খাবার এবং পানীয় থেকে বিরত থাকেন তখন তার ব্রেনের এজিং থাকে তখন সে তার এজিং টাকে প্রতিরোধ করতে পারে। 

যা আমাদের ব্রেনকে বৃদ্ধ হওয়া থেকে আটকাতে সাহায্য করে। বৃদ্ধকালে একজন মানুষের ব্রেনের যেই সকল সমস্যা দেখা দেয় তা হচ্ছে ডিমেনশিয়া, হান্টিংটন, পারকিনসন ইত্যাদি। রোজা থাকার কারণে আমাদের মস্তিষ্ক এই ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।

শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিশ্রামঃ রোজা থাকার কারণে একজন ব্যক্তি সেহেরী খাই আবার সন্ধ্যাবেলায় ইফতারি খাই। সেহেরি থেকে শুরু করে ইফতারি পর্যন্ত কোন কিছু পানাহার করে না। সেহেরি থেকে ইফতার এই সময়টুকু আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পাই।

রক্ত পরিশোধিত হয়ঃ আমাদের শরীরে শুদ্ধ রক্তের পাশাপাশি বিশুদ্ধ রক্ত থাকে। আর সেই বিশুদ্ধ রক্ত আমাদের শরীরের জন্য উপকারী নয়। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে সেই বিশুদ্ধ রক্ত পরিশোধন করতে রোজা অনেক কার্যকরী পদ্ধতি। তাই বলা যায় যে রোজা আমাদের শরীরের রক্ত পরিশোধিত করে।

ডায়াবেটিস রোধঃ ডায়াবেটিস আমাদের দেশের একটি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছরের হাজার হাজার মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে রোজা রাখার কারণে মানুষের শরীরের টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়।

আয়ুষ্কাল বৃদ্ধিঃ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল ব্যক্তিরা মাঝে মাঝে রোজা রাখেন তাদের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পায়। রোজা একজন ব্যক্তির আয়ুষ্কাল বৃদ্ধিতে অনেক বেশি সাহায্য করেন। আমাদের বিভিন্ন নবী রাসূলগণ বছরের বেশিরভাগ সময় রোজা রাখতেন এতে করে তাদের আয়ুষ্কাল ছিল অনেক বেশি।

কোষ পরিষ্কারঃ রোজা রাখলে আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি আমাদের কোষ ও পরিষ্কার হয়। আমাদের শরীরে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন রকম ক্রিয়া বিক্রিয়া হতে থাকে। আর সেই সকল ক্রিয়া বিক্রিয়ার কারণে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকম বজ্র পদার্থ ও টক্সিন তৈরি হয়। আর এই ধরনের বজ্র পদার্থ পরিষ্কার করার প্রধান পদ্ধতি হচ্ছে রোজা। যা আবিষ্কার করেছেন ডঃ ইয়োশিনোরি ওহসুমি। আর তার নাম হচ্ছে অটোফেজি।

রোজা রাখলে কি ওজন কমে

অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে রোজা রাখলে কি ওজন কমে? রোজাদার ব্যক্তি যদি সঠিক নিয়মে রোজা রাখেন তাহলে অবশ্যই তার ওজনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। কোন ব্যক্তি যদি ৩০ টি রোজা করার পরেও শারীরিক কোন পরিবর্তন দেখতে না পান তাহলে ধরে নিতে হবে সেই ব্যক্তি সঠিকভাবে রোজা করেনি। 

একজন রোজাদার ব্যক্তি সেহরির সময় খাবার খাই সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার পর ইফতারের সময় খাবার খেয়ে থাকে। এই কারণে অবশ্যই একজন ব্যক্তির শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। সারাদিন রোজা রাখার পর যদি আপনি ইফতারির সময় অতিরিক্ত ভাজাপোড়া অথবা অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খান তাহলে আপনার ওজনের কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে না। 

কিন্তু যদি রোজা রেখে অল্প পরিমাণে ভাজাপোড়া এবং অল্প পরিমাণে মিষ্টি জাতীয় খাবার খান তাহলে অবশ্যই রোজা রাখলে ওজন কমবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে একজন ব্যক্তি রোজা রাখলে অবশ্যই তার ওজনের পরিবর্তন আসবে।

রমজানে ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট

অতিরিক্ত ওজন এটি যেন অনেকের একটি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই সমস্যার সমাধানের জন্য মেনে চলছে নিয়মিত ডায়েটিং চার্ট। রমজান মাস আসলেই অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়েন ডায়েট চার্ট নিয়ে। 

কারণ এগারো মাসের যেই ডায়েট চার্ট ফলো করা হয় রমজান মাসের সেই ডায়েট চার্ট ফলো করা সম্ভব নয়। রমজান মাসে খাবার নিয়ম ও খাবার সময় দুটোই হয়ে যায় আলাদা। তাই অনেকেই রমজান মাসে ডায়েট চার্ট নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়ে। 

আপনিও যদি ওজন কমানোর জন্য ডায়েট চার্ট ফলো করেন এবং রমজান মাসের সেই ডায়েট চার্ট নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তাহলে আপনি রমজানে ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট তৈরি করতে পারেন। রমজান মাসে ডায়েট কিভাবে করবেন জেনে নিন।
  • রমজান মাসের ইফতারি অবশ্যই খেজুর দিয়ে শুরু করবেন। খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।
  • তারপর যেকোনো ধরনের পানীয় যেমন শরবত অথবা জুস খেতে পারেন। শরবত কিংবা জুসের চিনি ব্যবহার করবেন না।
  • চিনি অথবা গুড় দুটো থেকেই বিরত থাকার চেষ্টা করবেন।
  • অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • খাদ্য তালিকায় মিষ্টি জাতীয় খাবার রাখা থেকে বিরত থাকুন।
  • ইফতারের সময় খাদ্য তালিকায় সালাদ রাখতে পারেন।
  • ইফতারের সময় অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • রাতে ঘুমানোর পূর্বে হালকা ব্যায়াম করতে পারেন কিন্তু মনে রাখবেন অতিরিক্ত ভারী ব্যায়াম আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে তাই অবশ্যই ব্যায়ামের ভেতর হালকা ব্যায়াম করার চেষ্টা করবেন।
  • সেহেরীতে দেড় কাপ এর বেশি ভাত খাওয়া যাবে না।
  • সেহরি খাওয়ার পর এক গ্লাস দুধ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • সেহরি খাবার পরপরই ঘুমোতে যাবেন না কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন।

লেখকের মন্তব্য

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হচ্ছে রোজা। রোজা রাখলে একজন রোজাদার ব্যক্তি ইহকাল ও পরকাল দুই কালেই ফলাফল পেয়ে থাকেন। রোজাদার ব্যক্তি রোজা রাখার কারণে শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাই এবং পরকালের আল্লাহতালা বলেছেন রোজাদার ব্যক্তিকে তিনি নিজের হাতেই পুরষ্কৃত করবেন। 

তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত রোজা রাখা। আশা করছি আপনারা রমজানে ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট আর্টিকেলটি পড়ে রোজা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url