লাউ গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ থেকে মুক্তির সবথেকে সহজ উপায়

তেতুলের উপকারিতা ও অপকারিতা জানুনআপনার লাউ গাছের পাতাগুলো কি কোকড়ানো ভাব মনে হচ্ছে? যদি এমনটা হয় তাহলে আপনার লাউ গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ হয়েছে। তাই আপনি যদি এই সমস্যার সমাধান চান তাহলে আমার লেখা লাউ গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ আর্টিকেলটি পড়ুন। লাউ গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ এই আর্টিকেলে আমি বিস্তারিতভাবে লাউ গাছের রোগ ও প্রতিকার তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
লাউ গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ
আশা করছি আপনি যদি আমার লেখা লাউ গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পাবেন।

লাউ এর ফল পচা রোগ

আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। আমাদের দেশে বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। আর এ সকল সবজি চাষ করে চাষিরা লাভবান হয়। কিন্তু বিভিন্ন সবজির ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় কৃষকদের। তাই যেকোনো সবজি চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গাছের বেশ যত্ন সহকারে পরিচর্যা নিতে হয়। 

আমাদের দেশের শীতকালীন একটি জনপ্রিয় সবজি হচ্ছে লাউ। শীতকালে হাজার হাজার চাষী লাউ চাষ করে লাভবান হয়। লাউ চাষের ক্ষেত্রে লাউ গাছ যখন চারা অবস্থায় থাকে তখন থেকে শুরু করে লাউ গাছ মরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বিশেষভাবে যত্ন নিতে হয়। লাউ চাষ করার ক্ষেত্রে লাউ গাছে একটি বড় সমস্যা দেখা দেয় সেটি হচ্ছে লাউয়ের ফল পচা রোগ। 
লাউ গাছে লাউ ধরার পর অনেক লাউ পচে যায় আর সেই কারণে কৃষকদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। লাউ পচে যাওয়ার রোগের বৈজ্ঞানিক নাম বলা হয়ে থাকে এন্থ্রাকনোজ। এ রোগের কারণে লাউয়ের ফসল পচে যায়। এটি একটি ছত্রাক জাতীয় রোগ।

রোগের লক্ষণঃ এ ধরনের ছত্রাক আক্রমণ করার ফলে লাউ গাছের পাতায় গোলাকার ধরনের দাগ দেখা দেয়। তারপর আস্তে আস্তে সেই পাতা পচে যায়। এছাড়াও ফল যখন বাড়ন্ত অবস্থায় থাকে তখন ফলের শরীরে এক ধরনের কালো দাগ দেখা দেয়। আর সেই কালো দাগ আস্তে আস্তে বেড়ে যায় এবং ফল পচা শুরু করে। এই ধরনের ছত্রাক শুধুমাত্র লাউ গাছের পাতা ও ফলে আক্রমণ করতে দেখা যাই।

প্রতিকারঃ এ ধরনের ছত্রাক এর আক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে হলে ছত্রাক নাশক ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। যেমন-
  • ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ঔষধ - রিডোমিল গোল্ড ২০ গ্রাম
  • কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাক নাশক - এইমকোজিম ২০ গ্রাম
আপনি আপনার লাউ গাছের ফল পচা রোধ করার জন্য উপরের এই দুইটি ছত্রাক নাশক ঔষধ এর মধ্যে যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারেন।

ব্যাবহারবিধিঃ ২০ গ্রাম ঔষধ এর জন্য আপনাকে নিতে হবে ১০ লিটার পানি। এবার পানিতে ঔষধ গুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। ঔষধ মেশানোর পর দশ থেকে বারো দিন এই ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার স্প্রে করতে হবে। 

এটি যেহেতু ছত্রাক নাশক ঔষধ সেহেতু এটি প্রয়োগ করার পর বেশ কিছুদিন এর বিষাক্ততা ফলে অথবা গাছে লেগে থাকবে। তাই অবশ্যই এই বিষয়ে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে। এছাড়াও এটি ব্যবহারের সময় আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
আক্রমণ হওয়ার পূর্বে যা করবেনঃ অবশ্যই লাউ গাছের চারা রোপন করার আগে ভালোভাবে দেখে শুনে রোগ মুক্ত গাছ থেকে লাউ গাছের বীজ সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়াও লাউ গাছের চারা রোপন করার পর নিবিড় ভাবে এই গাছের পরিচর্যা করতে হবে। যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা করেন তাহলে ক্ষতির সম্মুখীন কম হবেন।

লাউ গাছের পাতা পোড়া রোগ

আপনি যদি একজন লাউ চাষী হয়ে থাকেন তাহলে বুঝতে পারবেন এটি লাউ গাছের একটি পরিচিত রোগ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় লাউ গাছ চারা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে যখন বড় হয় তখন লাউ গাছের পাতা এই ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ ধরনের রোগ লাউ গাছের পাতায় আক্রমণ করে থাকে।

রোগের লক্ষণঃ এ ধরনের রোগ লাউ গাছের পাতায় লক্ষ করা যায়। লাউ গাছের পাতায় প্রথমে ছোট ছোট হলদে ধরনের দাগ দেখা যায়। আর সেই দাগগুলো আস্তে আস্তে বড় হয়ে পুরো পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। যখন এ দাগগুলো পুরো পাতায় ছড়িয়ে পড়ে তখন সেই পাতা মরে যাই। আর এটি আস্তে আস্তে পুরো গাছে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগ প্রাথমিক অবস্থায় থাকা কালীন আক্রান্ত পাতাগুলো কেটে ফেলে দেওয়া উচিত।

প্রতিকারঃ এ ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে আপনি যেই ছত্রাকনাশক ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন তা হলঃ
  • টেবুকোনাজল+ট্রাইফ্লক্সিস্ট্রবিন জাতীয় ছত্রাক নাশক ঔষধ - নাটভো ৫ গ্রাম
  • প্রোপিকোনাজল জাতীয় ছত্রাক নাশক ঔষধ - টিল্ট ৫ মিলি
আপনি আপনার লাউ গাছের পাতা পোড়া রোগের সমাধানের জন্য উপরে দুইটি ছত্রাক নাশক ঔষধ এর ভেতর যে কোন একটি ব্যবহার করতে পারেন।

ব্যবহারবিধিঃ এই পরিমাণ ঔষধের জন্য প্রয়োজন হবে ১০ লিটার পানি। পানির সাথে ঔষধ গুলো ভালোভাবে মিশিয়ে ১০ থেকে ১২ দিন ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে। আর প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার প্রয়োগ করতে হবে। যেহেতু এই ঔষধ প্রয়োগ করার ফলে গাছের পাতা সহ গাছের ফল বিষাক্ত হয়ে থাকে তাই ১৫ দিন এই গাছের ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

আক্রমণ হওয়ার পূর্বে যা করবেনঃ যদি চান আপনার লাউ গাছ এর এই রোগ না হয় তাহলে অবশ্যই বীজ বপন আগেই করতে হবে এবং লাউ গাছে সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুষুম সার ব্যবহার করবেন।

লাউ গাছের রোগ ও প্রতিকার

একটি লাউ গাছ চারা অবস্থায় বপন করার পর থেকে বিভিন্ন রকম রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আর সেই সকল রোগের কারণে দেখা যায় লাউ গাছের ফলন কম হচ্ছে অথবা ফলন হওয়ার পরে ফসল গুলো পচে যাচ্ছে। আর সেই কারণে লাউ চাষীকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। 
লাউ চাষ করার পূর্বে অবশ্যই লাউ চাষীকে লাউ গাছের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে থাকতে হবে। তাহলেই একজন লাউ চাষী লাভবান হতে পারবে। এখন জেনে নিন লাউ গাছের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে।

১। লাউয়ের ভাইরাসজনিত রোগঃ এই ধরনের রোগ গাছের পাতায় আক্রমণ করে থাকে। ভাইরাসজনিত রোগ আক্রমণ করলে গাছের পাতায় হলুদ ও গারো সবুজ বর্ণের ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয়।

প্রতিকারঃ এই রোগ দেখা দেওয়ার প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত গাছগুলো তুলে ফেলে দেওয়া বেশি উত্তম। তাছাড়াও এই রোগ থেকে গাছকে মুক্ত করতে আপনি কীটনাশক এডমায়ার ১ মি. লি. এক লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছের স্প্রে করতে পারেন।

২। লাউয়ের পেস্টিসাইড ইনজুরিঃ এ রোগে গাছ আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত পেস্টিসাইড প্রয়োগ করা। অতিরিক্ত পেস্টিসাইড প্রয়োগের ফলে গাছের পাতা পুড়ে যায় এবং গাছ মরে যায়।

প্রতিকারঃ এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ যেহেতু অতিরিক্ত পেস্টিসাইড প্রয়োগ তাই অবশ্যই গাছে পেস্টিসাইড রোগের পূর্বে সঠিক মাত্রায় এবং সঠিক নিয়মে পেস্টিসাইড প্রয়োগ করতে হবে। এর জন্য আপনি অবশ্যই এর গায়ে লিখে থাকা নির্দেশগুলো ভালোভাবে পড়ে নিবেন। তারপর গাছে পেস্টিসাইড প্রয়োগ করবেন।

৩। লাউয়ের পাতা পোড়া রোগঃ এ রোগ লাউ গাছের পাতায় লক্ষ করা যায়। প্রথমদিকে লাউ গাছের পাতায় ছোট ছোট হলদে অথবা বাদামি রঙের দাগ দেখা দেয়। আস্তে আস্তে সেগুলো বড় হয় এবং একত্রিত হয়। একসময় লক্ষ্য করা যায় গাছের পাতাগুলো মরে গেছে।

প্রতিকারঃ রিডোমিল ও প্রোপিকোনাজল জাতীয় ঔষধ পরিমিত পানিতে মিশিয়ে লাউয়ের গাছে স্প্রে করতে হবে। এছাড়াও যে সকল পাতা আক্রান্ত হবে সেই সকল পাতা কেটে ফেলে দিতে হবে। স্প্রে করার ১৫ দিন পর্যন্ত এই গাছের ফল খাওয়া যাবে না। এছাড়াও চারা গাছ বপন করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে চারাগুলো যেন এ ধরনের রোগে আক্রান্ত গাছের না হয়।

৪। লাউয়ের গ্রে মোল্ড রোগঃ এই রোগ গাছের পাতায় ও কান্ডের উপর আক্রমণ করে থাকে। এটি একটি ছত্রাক জনিত রোগ। এই রোগে গাছ আক্রান্ত হলে গাছের পাতায় পানির মতো ভেজা দাগ দেখা দেয়। তারপর আস্তে আস্তে গাছের কাণ্ড পচতে শুরু করে।

প্রতিকারঃ এ রোগে গাছ আক্রান্ত হলে এক লিটার পানিতে ৭ গ্রাম কুপ্রাভিট ছত্রাক নাশক ঔষধ মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে। আর অবশ্যই সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুষম সার ব্যবহার করতে হবে। গাছের পরিচর্যা করতে হবে।

৫। লাউয়ের স্ক্যাব রোগঃ এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে গাছের পাতা এবং কাণ্ড ও ফলে বিভিন্ন রকম ক্ষত লক্ষ্য করা যায়। আক্রান্ত হওয়ার পর গাছের পাতাগুলো আস্তে আস্তে শুকিয়ে যায় ও মরে যাই।

প্রতিকারঃ এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে রিমোডিল পর্যাপ্ত পরিমাণ পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এছাড়াও বারবার এক জমিতে লাউ চাষ না করাই ভালো। তাছাড়াও আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে জমিতে লাউ চাষ করেছেন সে জমিতে যেন পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা থাকে।

৬। লাউয়ের ব্লোজম এন্ড রট রোগঃ এ রোগে আক্রান্ত হলে লাউয়ের নিচের অংশ কালো হয়ে বচন শুরু করে এবং আস্তে আস্তে পুরো লাউ পচে যায়।

প্রতিকারঃ এ ধরনের রোগ হবার প্রধান কারণ হচ্ছে জমিতে অম্লীয় ও ক্যালসিয়ামের অভাব। তাই জমিতে গর্ত প্রতি ৫০ থেকে ৮০ গ্রাম জিপসাম প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়াও জমিতে সঠিক সেচ দিতে হবে। জমিতে অম্লীয় এর পরিমাণ বাড়ানোর জন্য শতাংশ প্রতি চার কেজি করে ডলোচুন প্রয়োগ করতে পারেন।

৭। লাউয়ের লিফ কার্ল রোগঃ এ রোগে গাছ আক্রান্ত হলে গাছের পাতা কুচকিয়ে যায়।এছাড়াও যে সকল গাছের পাতা বয়স্ক হয় সেগুলো মচমচে হয়ে যায়। লক্ষ্য করা যায় যে গাছে প্রচুর পরিমাণে শাখা-প্রশাখা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অনেক বেশি ফুল ও ফল ভরছে। যার ফলে গাছের ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে যায়।

প্রতিকারঃ প্রাথমিক অবস্থাতে যে সকল গাছে এই রোগ দেখা দিবে সেই সকল গাছ তুলে ফেলে দিতে হবে। এছাড়াও চারা রোপনের পূর্বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন চারা রোপণ করতে হবে। এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ তাই যে সকল পোকা এই ধরনের ভাইরাস বহন করে সেগুলো ধ্বংস করার জন্য এডমেয়ার,ডায়ামেথেয়ট অথবা টিডো জাতীয় ঔষধ পানির সাথে মিশিয়ে গাছের স্প্রে করতে হবে। জমিতে যেকোনো ধরনের আগাছা থাকলে তা পরিষ্কার করতে হবে।

৮। লাউয়ের পাউডারী মিলিডিট রোগঃ গাছ যদি এই রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে গাছের পাতায় পাউডারের মতো সাদা সাদা আবরণ দেখা দেয়। অতিরিক্ত আক্রান্ত হলে গাছের পাতা মরে যাই।

প্রতিকারঃ এ রোগে আক্রান্ত হলে আক্রান্ত পাতাগুলো কেটে ফেলে দিতে হবে। এছাড়া যদি দেখা যায় আক্রান্ত বেশি হচ্ছে তাহলে প্রতি হেক্টর জমিতে যদি আপনি ১৫ কেজি সালফার গুড়া গাছের গোড়ায় ছিটিয়ে দেন তাহলে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। যদি তাতেও কোন কাজ না হয় তাহলে টিল্ট ২৫০ ইসি-০.৫ মি. লি. প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন।

৯। লাউয়ের ডাউনি মিলিডিট রোগঃ এই রোগ শুধুমাত্র গাছের পাতায় লক্ষ্য করা যায়। এ রোগে আক্রান্ত হলে গাছের পাতার নিচে গোলাপী অথবা বেগুনি ধরনের ছত্রাক লক্ষ্য করা যায়। আস্তে আস্তে পাতা কুচকিয়ে যায় এবং বয়স্ক পাতা মরে যাই। বয়স্ক পাতার সাথে সাথে কচি পাতাতেও এ রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। এ ধরনের রোগ সাধারণত যে সকল এলাকায় ঠান্ডা অথবা স্যাঁতস্যাঁতে বেশি থাকে সেসব এলাকাই বেশি দেখা যায়।

প্রতিকারঃ যে সকল পাতায় আক্রমণ করবে সে সকল পাতা কেটে ফেলে দিতে হবে। বীজ রোপনের পূর্বে অবশ্যই ভালো বীজ রোপন করতে হবে। যে সকল গাছ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত সে সকল গাছের বীজ সংগ্রহ করা যাবে না। এছাড়াও ১-২ গ্রাম সিকিউর অথবা রিডোমেল গোল্ড ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে।

১০। লাউয়ের নেতিয়ে পড়া রোগঃ এ রোগে আক্রান্ত হলে গাছ আস্তে আস্তে নেতিয়ে পরে এবং একসময় পুরো গাছ মরে যাই।

প্রতিকারঃ প্রাথমিক অবস্থাতে যে সকল গাছ এ রোগে আক্রান্ত হবে সে সকল গাছ তুলে ফেলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। গাছ লাগানোর পর অতিরিক্ত সেচ দেওয়া যাবে না। মাদার মাটির ক্ষেত্রে শোধন করতে হবে ফরমালিন দিয়ে। এ রোগে আক্রান্ত হলে ২ গ্রাম কুপ্রাভিট এক লিটার পানির সাথে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে। এই ঔষধ স্প্রে করার পর এই গাছের ফল ১৫ দিন পর্যন্ত খাওয়া যাবে না।

লাউ গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ

আমাদের আশেপাশের লাউ গাছে আমরা খুব সহজেই লক্ষ্য করি যে গাছের পাতাগুলো কুঁচগিয়ে গেছে। গাছের পাতা এরকম ভাবে কুচকে যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে সেই গাছ কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছে।আপনি যদি লাউ গাছে ভালো ফলন পেতে চান তাহলে অবশ্যই লাউ গাছের এই রোগ হলে দ্রুত সমাধান করতে হবে। এখন আমি আপনাদের সামনে এ রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করব।

লক্ষণঃ

  • এ রোগে আক্রান্ত হলে গাছের পাতা কুচকিয়ে যাই।
  • যে সকল গাছের পাতা অনেক বেশি বয়স হয় সে সকল পাতাগুলো মচমচে হয়ে যায়।
  • এ ধরনের রোগ ভাইরাসজনিত রোগের কারণে সাদামাছি দ্বারা ভাইরাস ছড়িয়ে থাকে।
  • এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর গাছের কান্ডগুলো খর্বাকৃতি হয়ে যায়।
  • গাছে লক্ষ্য করা যায় অতিরিক্ত শাখা প্রশাখা বের হয়েছে।
  • স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ফুল ও ফল ধরে।

প্রতিকারঃ

  • এই রোগে গাছ আক্রান্ত হলে প্রাথমিক অবস্থাতেই আক্রান্ত গাছগুলো তুলে ফেলে দিতে হবে।
  • যে সকল চারাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি সে সফল চারা বপন করতে হবে।
  • চারা রোপনের পূর্বে অবশ্যই দেখে শুনে চারা আনতে হবে। এই রোগে আক্রান্ত গাছের চারা রোপন করা যাবে না।
  • গাছের সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুষম ও ভালো মানের সার ব্যবহার করতে হবে।
  • গাছের জমিতে যদি আগাছা থাকে সে সকল আগাছা পরিষ্কার করে গাছের গোড়া আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।
  • এটি যেহেতু ভাইরাস জনিত রোগ সেহেতু যে সকল পোকা এই ভাইরাস বহন করে সেই সকল পোকার দমন করতে টিডো,ডায়ামেথেয়ট,এডমেয়ার জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করতে হবে।
  • ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং উপরে উল্লেখিত ঔষধের যেকোনো একটি ঔষধ ১ লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

আশা করছি আপনারা আমার লেখা লাউ গাছের পাতা কোকড়ানো রোগ এই আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন লাউ গাছের পাতা কেন কোকড়ায় এবং এর সমাধান কি। আপনি যদি চান আপনার লাউ গাছের ফলন ভালো হোক তাহলে অবশ্যই এরকম সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করুন। আমি এরকম প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নিয়মিত আর্টিকেল লিখে থাকি। তাই দ্যা বর্ষা ওয়েবসাইট এর সাথে থাকুন এবং নিয়মিত আমার লেখা আর্টিকেলগুলো পড়ুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url