গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না জেনে নিন

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় জানুনঅনেক গর্ভবতী মহিলা রয়েছে যারা অনেক বেশি চিন্তায় থাকেন গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না। আপনার চিন্তার কারণ ও যদি এইটা হয় তাহলে আমার লেখা আর্টিকেলটি পড়ুন। কারণ আমার লেখা আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না ও গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না তা তুলে ধরেছি। আপনি আর্টিকেলটি পড়ে জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না।
গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না
সুতরাং এ বিষয়ে জানতে আমার লেখা গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

গর্ভাবস্থায় কি তেঁতুল খাওয়া যাবে

গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মেয়ের একটি প্রধান সমস্যা হচ্ছে বমি বমি ভাব। প্রথমদিকে এই বমি বমি ভাব দিনের প্রায় সব সময় থাকে। বিশেষ করে ঘুম থেকে উঠে মর্নিং সিকনেস লক্ষ্য করা যায়। আর এই সিকনেস ও বমি বমি ভাব দূর করার জন্য অনেকেই বেছে নেই তেতুল। 

তেতুল খেলে খুব সহজেই বমি বমি ভাব দূর হয়ে যায়। আমরা সকলেই জানি তেতুলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কিন্তু গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়া আসলেই কতটা উপকারী তা কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার পূর্বে আপনাকে তেঁতুল খেলে কি কি সাইড ইফেক্ট হতে পারে সেগুলো জানতে হবে। 
না জেনে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে সেটি আপনার হতে পারে বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় যদি তেতুল খেতে চান তাহলে গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন হন।

উপকারিতাঃ

  • গর্ভাবস্থায় মেয়েদের শরীরের বিভিন্ন রকম পরিবর্তন হয়ে থাকে। আর সেই কারণে অনেক সময় শরীরের বিভিন্ন রকম ব্যাথা হয়ে থাকে আর তেঁতুল সেই সকল ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • তেতুলে উপস্থিত উপাদান একজন গর্ভবতী মহিলার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অনেক বেশি সাহায্য করে।
  • গর্ভাবস্থায় মেয়েদের আরেকটি প্রধান সমস্যা হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। আর তেতুল এই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
  • তেতুল হজমের সমস্যা দূর করতেও অনেক বেশি সাহায্য করে থাকে।
  • গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব কমানোর জন্য তেতুল অনেক বেশি সাহায্য করে।

অপকারিতাঃ

  • একটি গর্ভবতী মহিলা তেঁতুল খেলে তার রক্তে শর্করার ভারসাম্যহীনতা দেখা দেবে।
  • গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়ার ফলে রক্তচাপের ক্ষতি হতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত তেতুল খাওয়ার ফলে ভ্রুনের ক্ষতি হতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার পরে সময়ের পূর্বে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

গর্ভাবস্থায় তেঁতুল আপনার জন্য উপকারী নাকি অপকারী তা নির্ভর করছে আপনার তেতুল খাওয়ার ধরনের ওপর। গর্ভাবস্থায় তেতুল খেতে চাইলে বুঝে শুনে অল্প পরিমাণে খেতে হবে। আপনার যদি গর্ভাবস্থায় তেতুল খেতে ইচ্ছা করে তাহলে ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিয়ে তেতুল খেতে পারেন। তবে তেতুল খেলে অবশ্যই আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ কেমন তা পরীক্ষা করাতে হবে। 

তেতুলে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ উপস্থিত রয়েছে কিন্তু এমন নয় যে তেতুল খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরে কোন পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে। তাই যদি তেতুল খান তার পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার ও খেতে হবে। কিন্তু গর্ভাবস্থায় কাঁচা তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় অনেক মা রয়েছেন যারা অনেক বেশি চিন্তিত থাকেন বিশেষ করে প্রথমবার যে মহিলা গর্ভধারণ করে সেই সকল মহিলা একটু বেশি চিন্তিত হন। কারণ তারা বুঝতে পারে না গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে আর কি কি খাওয়া যাবে না। 

তাই অনেক বেশি ভাবনা চিন্তা করেন কোনটা খাবেন আর কোনটা খাবেন না। কোনটি খাওয়ার ফলে তার গর্ভে থাকা শিশু সুস্থ থাকবে আর কোনটি খাওয়ার ফলে গর্ভে থাকা শিশুর অসুবিধা হবে। কিছু কিছু খাবার রয়েছে যে সকল খাবার গর্ভাবস্থায় খাওয়া উচিত নয়। 
সে সকল খাবার ফলে হতে পারে বিভিন্ন রকম সমস্যা। তাই অবশ্যই সে সকল খাবার গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। আপনিও যদি প্রথমবার গর্ভধারণ করেন এবং এসব বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাহলে জেনে নিন গর্ব অবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না।

কফিঃ অনেকে রয়েছেন যারা কফি খেতে অনেক বেশি পছন্দ করেন। আপনিও যদি কফি খেতে পছন্দ করে থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় সেই পছন্দটাকে একটু সাইডে রেখে কফি খাওয়া বন্ধ করুন। কারণ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কফি খাওয়ার ফলে আপনার গর্ভ থাকা শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করবে। যদি কফি খাওয়া খুব বেশি প্রয়োজন হয় তাহলে আপনি দিনে এক কাপ খেতে পারেন।

চাঃ এমন অনেকে রয়েছে যাদেরকে চা পাগল ও বলা যেতে পারে। যে কোন সময় যেকোন কারণে চা খেতে বসে এমন মানুষ অনেক রয়েছে। এই মানুষের তালিকায় যদি আপনি থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় আপনার শিশুর কথা ভেবে চা খাওয়া কমাতে হবে। এমনটা নয় গর্ভাবস্থায় আপনি চা একেবারেই খেতে পারবেন না। অবশ্যই খেতে পারবেন কিন্তু খাওয়ার পরিমাণ একটু কমাতে হবে।

হাফ বয়েল ডিমঃ অনেকের পছন্দের তালিকায় আধা সিদ্ধ ডিম জায়গা দখল করে থাকে। তারা ডিম পুরো সিদ্ধ খাওয়ার থেকে আদা সিদ্ধ খেতে অনেক বেশি পছন্দ করে। কিন্তু প্রেগনেন্সির সময় এই আদা সিদ্ধ ডিম হতে পারে বড় ধরনের সমস্যার কারণ। 

কারণ ডিম যখন পুরোপুরি সিদ্ধ করা হয় তখন ডিমের ভেতর থাকা ব্যাকটেরিয়া পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে যায়। কিন্তু ডিম যখন আধা সিদ্ধ করা হয় তখন ডিমের ভেতরে থাকা ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরে প্রবেশ করে যা থেকে বমি, মাথা ব্যথা ও জ্বরের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আধা সিদ্ধ মাংসঃ অনেক ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে অনেক মানুষ আধা সিদ্ধ মাংস খাচ্ছে। যা আমাদের শরীরের জন্য একদমই ঠিক নয়। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় তো এটি থেকে আরো দূরে থাকা উচিত। 

কারণ মাংস যখন অর্ধেক সিদ্ধ করে খাওয়া হয় তখন মাংসে থাকা ব্যাকটেরিয়া পুরোপুরি ধ্বংস না হয়ে তা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে এবং আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এক্ষেত্রে যদি গর্ভাবস্থায় আধা সিদ্ধ মাংস খাওয়া হয় তাহলে এটি আপনার শিশুর জন্য উপকারী হবে না।

কাঁচা অথবা পুরোপুরি রান্না না করা মাছঃ আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। ভাতের সাথে মাছ থাকলে আমাদের আর অন্য কিছু প্রয়োজন হয় না। মাছের ভর্তা, মাছের ঝোল অথবা মাছ ভাজা সব রকম ভাবেই মাছ আমাদের পছন্দের। মাছে রয়েছে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান। একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য অবশ্যই মাছ খাওয়া উপকারী। 

কিন্তু সেটি যদি হয় কাঁচা অথবা আধা সিদ্ধ তাহলে সেটি কখনোই উপকারী নয়। আধা সিদ্ধ মাছে থাকতে পারে বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস। যা একজন গর্ভবতী মহিলা ও গর্ভে থাকা শিশু দুজনের জন্যই ক্ষতিকর। মাছ খাওয়ার পূর্বে ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে।
কাচা দুধঃ এ টি শুনে হয়তো অনেকেই অবাক হবেন। কে আবার কাচা দুধ খাই। কিন্তু অনেকে রয়েছে যারা কাচা দুধ খেয়ে থাকেন। খুব কম মানুষ থাকলেও কিছু কিছু মানুষ রয়েছেন যারা কাচা দুধ খাওয়া পছন্দ করেন। 

আর আপনি যদি সেই কদাচিৎ মানুষের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় সাবধানতা অবলম্বন করুন। কাচা দুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ কাচা দুধে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে যা আপনার ও আপনার গর্ভে থাকা শিশু দুজনের জন্যই ক্ষতিকারক।

কলিজাঃ কলিজাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। গর্ভাবস্থায় অবশ্যই একজন মহিলার ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু মনে রাখবেন গর্ভাবস্থায় কোন কিছুই অতিরিক্ত গর্ভবতী মহিলা ও তার শিশুর জন্য হতে পারে ক্ষতিকারক। যেহেতু কলিজাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে তাই কলিজা খাওয়ার সময় একটু বুঝে শুনে এবং পরিমাপ বুঝে খাবেন।

মদ্যপানঃ মদ্যপান আমাদের দেশে মহিলাদের মাঝে কম দেখা গেলেও কিছু কিছু মহিলা রয়েছে যারা বিভিন্ন রকম পার্টিতে মদ্যপান করে থাকে। আর এই মদ্যপান গর্ভবতী মহিলা হন কিংবা সাধারণ মানুষ কারো জন্যই ভালো নয়। কিন্তু বিশেষ করে যদি আপনি গর্ভবতী হন তাহলে এটি হতে পারে আপনার ও আপনার গর্ভে থাকা শিশুর জন্য ক্ষতিকারক উপাদান। তাই গর্ভাবস্থায় মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন।

দ্রষ্টব্যঃ উপরে উল্লেখিত উপাদান গুলো আপনাদের সচেতন করার জন্য বলা হয়েছে। অনেক সময় বিভিন্ন গর্ভবতী মহিলার বিভিন্ন রকম সমস্যার কারণে অনেক ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হতে পারে। তাই অবশ্যই কোন কোন খাবার গর্ভাবস্থায় খাওয়া যাবে না তা জানতে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলার জন্য ফল খাওয়া অত্যন্ত জরুরী তা আমরা সকলেই জানি। ফলে রয়েছে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভে থাকা সন্তানের জন্য জরুরী। তাই গর্ভবতী মহিলারা গর্ভধারণের প্রথম থেকেই বিভিন্ন ধরনের ফল খাওয়া শুরু করেন। 

কারণ তারা চাই তাদের গর্ভে থাকা সন্তান যেন সুস্থ থাকে। কিন্তু আপনি যেই ফল খাচ্ছেন আপনার গর্ভে থাকা সন্তানকে সুস্থ রাখার জন্য সেই ফল যদি হয় আপনার গর্ভে থাকা সন্তানের ক্ষতির কারণ তাহলে। সব হলেই রয়েছে কোনো না কোনো ভিটামিন অথবা পুষ্টি। কিন্তু কিছু কিছু ফল রয়েছে যে সকল ফল গর্ভাবস্থায় খেতে বিভিন্ন চিকিৎসকগণ মানা করে থাকেন। 

কারণ সে সকল ফলে এমন কিছু উপস্থিত থাকে যা আপনার গর্ভে থাকা সন্তানের অপকার হতে পারে। তাই গর্ব অবস্থায় সেই সকল ফলগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবেনা সেই সম্পর্কে আমি আলোচনা করলাম।

পেঁপেঃ পাকা পেঁপে অনেকের পছন্দের তালিকায় লক্ষ করা যায়। কিন্তু গর্ভাবস্থায় এই পেঁপে হতে পারে আপনার গর্ভপাতের কারণ। গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাওয়ার বলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। পেঁপে খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা দূর হলেও তা আপনার শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায়ী পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

আঙ্গুরঃ অনেক মা বোন রয়েছে যারা গর্ভাবস্থায় আঙ্গুর খেয়ে থাকে। আঙ্গুর খাওয়ার ফলে বিশাল সমস্যা হবে তা কিন্তু নয়। অথবা সকল ডায়টেশিয়ান যে আঙ্গুর খেতে মানা করে এটাও কিন্তু নয়। কিন্তু কিছু কিছু ডায়টেশিয়ান রয়েছে যারা গর্ভাবস্থায় আঙ্গুর খেতে মানা করে থাকে। কারণ আঙ্গুর এমন একটি ফল যা চাষ করার সময় বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। যা আঙ্গুরের ভেতর উপস্থিত থেকে যাই। আর সে আঙ্গুর খাওয়ার ফলে আপনার গর্ভে থাকা সন্তানের সমস্যা হতে পারে।

আনারসঃ আনারস অনেক মহিলার খুব বেশি পছন্দের একটি ফল। কারণ আনারসের স্বাদ হচ্ছে টক মিষ্টি। যা মহিলাদের অনেক বেশি পছন্দের। কিন্তু যতই পছন্দের হোক না কেন গর্ভ অবস্থায় এই ফল থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করত হবে। 

আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন। আর এই উপাদান মহিলাদের জরায়ুকে নরম করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় যদি আপনি আনারস খান তাহলে সন্তান প্রসবের আশঙ্কা বেড়ে যাই। তাই যতটা সম্ভব আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

তেতুলঃ তেতুল একটি এমন ফল যা সব সময় মহিলাদের পছন্দের তালিকার প্রথম স্থান দখল করে থাকে। তেতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের প্রোজেস্টেরনের উৎপাদন করে কমিয়ে দেয়। 

এছাড়াও একটি মহিলার ভ্রুনের কোষের ও ক্ষতি করে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় তেতুল খেতে পারেন কিন্তু সেটির পরিমাণ হবে সীমিত। তাছাড়াও আপনি তেঁতুল খেতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তেতুল খেতে পারেন।

কলাঃ গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া অনেক বেশি উপকারী তা আমরা সকলেই জানি। কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন। তাই অনেক সময় শরীরে যদি আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসকগণ কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকগণ গর্ভবতী মহিলাকে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন। 

যদি কোন মহিলার এলার্জির সমস্যা থাকে অথবা ডায়াবেটিসের সমস্যাই ভুগে থাকেন তাহলে চিকিৎসকগণ সেই মহিলাকে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন। তাই আপনি যদি এ দুটি সমস্যার মধ্যে থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

খেজুরঃ খেজুর একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য অনেক বেশি উপকারী। কারণ খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান। কিন্তু অবশ্যই খেজুর খেতে হলে অল্প পরিমাণে খেজুর খেতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খেলে খেজুরে উপস্থিত ভিটামিন গর্ভবতী মায়ের শরীর উত্তপ্ত করে তুলে। 

তাছাড়াও গর্ভবতী মায়ের জরায়ুর পেশী গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সংকোচন করে। তাই অবশ্যই খেজুর খাওয়ার সময় মাথায় রাখতে হবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খাওয়া যাবেনা।

এছাড়াও আপনার শরীরের বিভিন্ন রকম সমস্যার কারণে কোন কোন ফল আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় কি খাবেন এবং কি খাবেন না এই বিষয়ে জানার জন্য একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না

গর্ভকালীন সময় এমন একটি সময় যখন গর্ভবতী মহিলার সাথে সাথে তার ভেতর আরেকটি জান বাড়তে থাকে। প্রতিটি মেয়ে চাই তার গর্ভে থাকা সন্তান যেন সুস্থ ভাবে পৃথিবীর মুখ দেখে। আর সেজন্যেই সেই গর্ভবতী মহিলা সন্তানের জন্মের আগেই যখন সে মায়ের গর্ভে থাকে তখন থেকেই সেই মা বিভিন্ন রকম সতর্কতা অবলম্বন করে থাকে। 

তাই অনেক গর্ভবতী মহিলা গর্ভকালীন সময়ে খুব চিন্তিত থাকে কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত আর কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত নয় এই বিষয়ে। মাছ এমন একটি খাদ্য যা একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য অনেক বেশি উপকারী। তাই বিভিন্ন চিকিৎসকগণ গর্ভবতী মহিলাদেরকে মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

কিন্তু মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ বিভিন্ন চিকিৎসকগণ যে সকল মাঝে পারদ এর পরিমাণ বেশি সেই সকল মাছ খেতে নিষেধ করে থাকে। এখন জেনে নিন গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না।

  • শার্ক মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পারদ। যা একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য ক্ষতিকারক। তাই গর্ব অবস্থায় এই মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • টুনা মাছের ক্ষেত্রেও দেখা যায় পারদের পরিমাণ অনেক বেশি তাই চিকিৎসকগণ গর্ব অবস্থায় টুনা মাছ খেতে নিষেধ করে থাকেন।
  • শুটকি মাছে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। শুটকি মাছে উপস্থিত ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ এতটা বেশি যে এটিকে দুধের বিকল্পেও খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু শুটকিতে বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত থাকে যা একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য ক্ষতিকারক।
  • পাঙ্গাস মাছের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় পুকুরে চাষের চেয়ে পাঙ্গাস মাছ কারখানায় বেশি চাষ করা হয়ে থাকে। আর কারখানায় চাষ করার সময় পাঙ্গাস মাছের স্বাদ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন রকম কীটনাশক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা একজন গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভে থাকা সন্তানের জন্য ক্ষতিকারক।

উপরে আপনারা জানতে পারলেন গর্ভাবস্থায় কোন কোন মাছ খাওয়া যাবে না। এখন জেনে নিন গর্ভাবস্থায় কোন কোন মাছ খাওয়া উপকারী।

  • চিংড়ি
  • স্যামন
  • তেলাপিয়া
  • মাগুর
  • শিং
  • ইলিশ
গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে মাছ খাওয়া উপকারী কিন্তু অবশ্যই মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখবেন মাছ যেন কাঁচা অথবা আধা সিদ্ধ না থাকে। মাছ খাওয়ার পূর্বে মাছগুলোকে ভালোভাবে রান্না করে নিতে হবে। তাহলে সেটি গর্ভবতী মহিলার জন্য উপকারী আর যদি আদা সিদ্ধ অথবা কাঁচা মাছ খান তাহলে সেই মাছ গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভে থাকা সন্তানের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না

আমরা সকলেই জানি একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য সবজি খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু সকল সবজি যে গর্ভবতী মহিলার জন্য উপকারী তা কিন্তু নয়। কিছু কিছু সবজি রয়েছে যে সকল সবজি গর্ভাবস্থায় খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না।

করলাঃ করলা এমন এক ধরনের একটি সবজি যা অনেকেই খুব একটা পছন্দ করেনা। বিশেষ করে ছোট বাচ্চারা এই সবজির থেকে অনেকটা দূরে থাকতে পছন্দ করে। এই সবজি আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। 

বিভিন্ন রকমের সমস্যা দূর করতে এই সবজি সাহায্য করে থাকে। কিন্তু গর্ভাবস্থায় এই সবজি থেকে দূরে থাকাই ভালো। কারণ করলাতে রয়েছে গ্লাইকোলাইসিন তাছাড়া ও সেপনিক নামক ক্ষতিকারক উপাদান। যা একজন গর্ভবতী মহিলা ও তার সন্তানের জন্য ক্ষতিকর।

টমেটোঃ টমেটো একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য খাওয়া ভালো। কিন্তু যে সকল টমেটো প্রক্রিয়াজাতকরণ করে সারা বছর রাখা হয় সে সকল টমেটো খাওয়া উচিত নয়। কারণ আমরা সকলেই জানি টমেটো হচ্ছে শীতকালীন সবজি। তাই সবজি শীতকালে খেলে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু যদি বিভিন্ন সুপারমার্কেট থেকে প্রক্রিয়াজাত করা টমেটো খান তাহলে এটি মা ও সন্তানের জন্য ক্ষতি নিয়ে আসবে।

সজিনাঃ অনেকেই রয়েছে সজিনা খেতে অনেক বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে সজিনা তে রয়েছে এমন একটি উপাদান যা একজন গর্ভবতী মহিলার গর্ভপাতের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় সজিনা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

না ধোয়া সবজিঃ কখনোই বাইরে থেকে কিনে আনা সবজি না ধুয়ে খাওয়া উচিত নয়। বাইরে থেকে কিনে আনা সবজি না ধুয়ে খাওয়ার ফলে তাতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া ও জীবানু গর্ভবতী মহিলা ও গর্ভে থাকা সন্তানের ক্ষতি করে নিয়ে আসবে। তাই গর্ভাবস্থায় না ধোয়া সবজিগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

বাইরের কেনা সালাদঃ অনেকেই সালাদ খেতে অনেক বেশি পছন্দ করে। তাই অনেক সময় বাসায় ঝামেলা না করে বাইরে রেস্টুরেন্ট থেকে সালাদ কিনে খেয়ে থাকে। এটা কখনোই করা উচিত নয়। কারণ রেস্টুরেন্টের সালাদে বিভিন্ন রকম ব্যাকটেরিয়া জীবাণু থাকতে পারে। যা খাবার ফলে গর্ভে থাকা শিশুর ক্ষতি হতে পারে। তাই বাইরের কেনা সালাদ না খেয়ে বাসায় তৈরি করে সালাদ খাওয়ার চেষ্টা করুন।

পরামর্শমূলক কিছু কথা

আপনি যদি আপনার গর্ভে থাকা সন্তানের শরীরের সুস্থতা নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত থাকেন এবং গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না এবং কোন কোন খাবার গুলো খাওয়া যাবে এই সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের নিকট গিয়ে তার পরামর্শ নিবেন। কারণ একজন চিকিৎসক এই সকল বিষয়ে আপনাকে সব থেকে ভালো পরামর্শ দিতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url