সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়

আপনি কি সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় এ নিয়ে চিন্তিত আছেন তাহলে নিশ্চিন্তে আমার লেখা সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় এই আর্টিকেলটি পড়ুন। সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় এই আর্টিকেলে আমি বিস্তারিতভাবে সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় এবং সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়
আশা করছি আমার লেখা সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পাবেন। প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পেতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকে

এখনকার সময়ে মায়েদের সিজার এটি একটি কমন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে মহিলারা নরমাল ডেলিভারি এর থেকে সিজার করা এর থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কিন্তু অনেকেই সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকে এই সম্পর্কে সঠিকভাবে জানে না। অনেকে মনে করে সিজার করা মানে সারা জীবন ব্যথা হতে পারে। 
কিন্তু সিজারের পর কিছুদিন অপারেশনের জায়গায় ব্যথা হয়ে থাকে। কখনো কখনো কারো এই ব্যথা কয়েক সপ্তাহ থাকে। তাই সিজারের পর ব্যথা অনেকদিন থাকে এটি ভুল ধারণা। সঠিকভাবে চর্চা নিলে খুব সহজেই সেই ব্যথা কমে যায়।

সিজারের কতদিন পর গোসল করা যায়

আপনি কি সিজারের কতদিন পর গোসল করা যায় এই নিয়ে টেনশনে আছেন। আপনি ঠিক জানেন না যে সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় আর সিজারের কতদিন পর গোসল করা যায়। তাহলে জেনে নিন সাধারণত এখন সিজারের পর সেলাইয়ের পরিবর্তে কসমেটিক সার্জারি বেশি করা হয়ে থাকে। সাধারণত ডাক্তারেরা সিজারের দুই থেকে তিন দিন পর গোসল করা যাবে বলে থাকে। 
কিন্তু অবশ্যই গোসল করার সময় আপনাকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যেন কাটার সেই অংশে পানি না পৌঁছাই। আপনি গোসলের পূর্বে কাটা অংশে গামছা কিংবা তোয়ালে দিয়ে আবরণ দিয়ে রাখতে পারেন। যাতে করে কাটা অংশে পানি পৌঁছাতে না পারে।

সিজারের পর সেলাই ব্যাথা হলে করণীয়

সিজার করা আমাদের সমাজে একটি কমন বিষয় হয়েছে। এটির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। একটি গর্ভবতী মায়ের যখন প্রসবকালীন কোনরকম সমস্যা হয় তখন ডাক্তারেরা তাকে সিজারের পরামর্শ দিয়ে থাকে। সিজারের সময় কোনরকম সমস্যা না হলেও অনেক সময় দেখা যায় সিজারের পর সেলাই ব্যথা হচ্ছে। যা একজন মহিলাকে অনেক বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়। আসুন তাহলে জেনে নেই সিজারের পর সেলাই ব্যাথা হলে করণীয় গুলো কি কি।
  • সিজারের পর একজন মহিলাকে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়। কিন্তু যদি সিজারের পর সেলাইয়ে ব্যথা হয় তাহলে তাকে আরো অনেক বেশি সতর্ক এবং সাবধান থাকতে হবে।
  • খুব বেশি হাটাহাটি করা কিংবা সিঁড়ি দিয়ে উঠা নামা করা যাবে না।
  • অনেক সময় দেখা যায় আমাদের বসার কিংবা শোয়ার পজিশান ঠিক থাকে না সে কারণেও ব্যথা হয়ে থাকে। তাই অবশ্যই শোয়ার এবং বসার সময় নিজের পজিশান ঠিক রাখার চেষ্টা করুন।
  • সিজারের পর কখনোই কোনরকম ভারী জিনিস চারা যাবে না কিংবা জোর দিয়ে কোন কাজ করা যাবে না।
  • যে সকল ঔষধ ডাক্তার খেতে দেবেন সেই সকল ঔষধ নিয়ম করে এবং যতদিন খেতে দেবেন ঠিক ততদিন খেতে হবে।
  • সিজারের পর আপনাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে।
  • নিজের প্রতি যত্ন নিতে হবে।

সিজারের কতদিন পর ভারী কাজ করা যায়

আমরা অনেকেই আছি যারা জানিনা সিজারের কত দিন পর ভারী কাজ করা যায়। অনেকেই মনে করি সিজার করলে সারা জীবন ভারী কাজ করা যাবে না। আর এই ভয়ে অনেকে সিজার করাতে চান না। কিন্তু সত্য কথা বলতে সিজারের পর কমপক্ষে ছয় সপ্তাহ ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হয়। তাছাড়াও চিকিৎসা করা তিন মাস যেকোনো ভারী কাজ করতে মানা করে থাকেন। কিন্তু একটা সময় পর সিজারের রোগীও ভারী কাজ করতে পারেন এতে কোনরকম সমস্যা হয় না।

সিজারের কতদিন পর সেলাই মেশিন চালানো যায়

আমাদের বাংলাদেশে এমন অনেক মহিলা আছে যারা বাসায় সেলাই মেশিনের কাজ করে থাকেন। তাদের মনে অনেক সময় প্রশ্ন যাবে সিজারের কত দিন পর সেলাই মেশিন চালানো যায়। সিজার হওয়ার পরে চিকিৎসক দুই থেকে তিন মাস বাসায় বিশ্রাম নেয়ার কথা বলে থাকে। তাদের মতে সেলাই মেশিনের কাজ দুই থেকে তিন মাস পর করা উচিত। 
কারণ অনেক সময় এমন হয় মনে হয় সেলাই বাইরে থেকে শুকিয়ে গেছে কিন্তু ভেতর শুকোয় না। আর যার ফলে মেশিন চালালে ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনি যদি সেলাই মেশিন চালাতে চান তাহলে আগে ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ নেবেন। আর আপনার শরীরের অবস্থা বুঝে ডাক্তার আপনাকে পরামর্শ দেবে ঠিক কতদিন পর আপনি সেলাই মেশিন চালাতে পারবেন।

সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়

সিজারের পর অনেকের মনে প্রথম প্রশ্ন জাগে যে সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়। কারণ আমাদের জীবনে প্রতিনিয়তই কোথাও না কোথাও যাওয়া আসা করতে হয়। সিজারের পর জার্নির করা যাবে কিনা সেটি নির্ভর করে সিজারের রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর। কারণ সিজারের পর একজন মহিলা যত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন তত তাড়াতাড়ি জার্নি করতে অসুবিধা হবে না। 

সাধারণত দুই থেকে তিন মাস পর ছোটখাটো জার্নিগুলো করতে পারেন। কিন্তু এর আগে যদি কোন মহিলা জার্নি করেন তাহলে যাতায়াতের সময় ঝাঁকুনি এর ফলে কাঁটা জায়গায় ব্যথা পেতে পারে। তাই অবশ্যই দুই থেকে তিন মাস আগে কোনরকম জার্নি না করার চেষ্টা করবেন।

সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ

অনেক সময় দেখা যায় সিজারের রোগীর কাঁটা স্থানে ইনফেকশন হয়ে গেছে। কারণ আমরা জানি না সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়। তাই শুধু উপরের শুকনো অংশ দেখে মনে হয় সেলাই শুকিয়ে গেছে। আর যে সকল কাজ থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত সে সকল কাজ করে বসি। আর যার ফলে সেই কাটা স্থানে ইনফেকশন হয়ে যায়। আসুন এখন জেনে নেই সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো কি কি
  • যদি কাটা স্থানে ইনফেকশন হয় তাহলে কাটা জায়গার চারপাশ লাল হয়ে যায় এবং খুলে যায়।
  • অনেক সময় কাটা স্থান হতে পুঁজ কিংবা রস বের হয়।
  • ইনজেকশন এর ফলে শরীরে জ্বর জ্বর থাকতে পারে।
  • অনেক সময় প্রশাব করতে অনেক কষ্ট হয়।
  • ইনফেকশনের ফলে আপনার পেটে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
  • যোনিপথের রাস্তায় রক্ত কিংবা দুর্গন্ধ জনিত রস বের হতে পারে।
  • উপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলো আপনার প্রকাশ পেলে বুঝতে হবে আপনার কাটা অংশ ইনফেকশন হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

সিজারের কতদিন পর মাসিক হয়

মাসিক এটি মহিলাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একটি মহিলা যখন গর্ভধারণ করে তখন তার শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। আর সেই পরিবর্তনের একটি হচ্ছে মাসিক। একটি মহিলা যখন গর্ভধারণ করে গর্ভধারণ এর শুরু থেকে বাচ্চা প্রসব করার আরো বেশ কিছু সময় মেয়েদের মাসিক বন্ধ থাকে। মেয়েদের বাচ্চা হওয়ার পরও বেশ কিছু সময় মাসিক বন্ধ থাকা এটি অনেকে মনে করে সমস্যা কিন্তু আসলেই এটি কোন রকম সমস্যা নয়। 

কারণ সিজারের পর বেশ কিছু সময় মাসিক বন্ধ থাকা এটি স্বাভাবিক বিষয় এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোন বিষয় নয়। আপনি যদি জানতে চান সিজারের কতদিন পর মাসিক হয় তাহলে আমার উত্তর হবে সিজারের পর কারো কারো আঠারো মাসেই মাসিক দেখা দেয় আবার কারো কারো এটি দুই বছর ও সময় দিতে পারে। তাই এটা নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।

সিজারের কতদিন পর মিলন করা যায়

আমাদের অনেকেরই এই বিষয়ে কোন জ্ঞান নেই সিজারের কতদিন পর মিলন করা যায়। বিভিন্ন চিকিৎসকগণ সিজারের পর কম করে তিন মাস অর্থাৎ ৯০ দিন যৌন মিলন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ৯০ দিন আগে যৌন মিলনের ফলে গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন রকম সমস্যা হতে পারে। তাই অবশ্যই সিজারের কম করে ৯০ দিন পর্যন্ত যৌন মিলন হতে বিরত থাকুন। যৌন মিলনের পূর্বে রোগীর পেটের কাঁটা স্থান কেমন আছে সেটি বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। তাছাড়াও রোগীর শারীরিক অবস্থা দেখতে হবে।

সিজারের কতদিন পর মিষ্টি খাওয়া যায়

অনেক মহিলা রয়েছে যারা মিষ্টি খেতে অনেক বেশি পছন্দ করে। কিন্তু সিজার হওয়ার কারণে মিষ্টি খেতে পারে না। সিজারের পর মিষ্টি খাওয়ার দিকে আপনাকে অবশ্যই একটু বেশি নজর দিতে হবে। মিষ্টি খেলেই যে আপনার সমস্যা হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়। কিন্তু হ্যাঁ মিষ্টি খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকতে হবে। অনেক সময় মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে ইনফেকশন হতে পারে। 

তাই সিজারের পর কমপক্ষে তিন সপ্তাহ মিষ্টি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তারপরে অল্প সল্প মিষ্টি খেতে পারেন। কিন্তু যদি দেখেন মিষ্টি খাওয়ার ফলে কাঁটা স্থানে ঘা এর মত কিছু কিংবা সেখান থেকে রস বের হচ্ছে তাহলে অবশ্যই আপনাকে মিষ্টি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে হবে।

সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না

বিভিন্ন ধরনের খাবার আছে যে সকল খাবার সিজারের পর খাওয়া ঠিক নয়। আপনি কি জানেন সেই সকল খাবারগুলো কি কি। যদি না জেনে থাকেন তাহলে জেনে নিন সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না।
  • সিজারের পর রোগীর কফি খাওয়া হতে বিরত থাকতে হবে। কারণ একজন সিজারিয়ান মা যদি কফি খাই তাহলে সেই কফি মায়ের বুকের দুধে মিশে যাবে। আর সেই দিন যখন বাচ্চা পান করবে তখন সেই বাচ্চার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • সিজারের পর রোগীকে রসুন খাওয়া হতে বিরত থাকতে হবে।
  • সিজার হওয়ার পর অবশ্যই চকলেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • ব্রকোলি এবং ফুলকপি খাওয়া হতে বিরত থাকুন। কারণ যে।সকল খাবার মা খায় সেই খাবারের পুষ্টি দুধের সাহায্যে বাচ্চার ভেতর পৌঁছায়। আর ব্রকোলি আর ফুলকপি গ্যাস উৎপন্ন করতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
  • সিজারিয়ান মাকে অবশ্যই ভাজাপোড়া কম খেতে হবে।
  • সিজারের পর একজন মহিলার কখনোই উচিত হবে না অ্যালকোহল জাতীয় খাবার খাওয়া।

সিজারের পর মায়ের খাবার তালিকা

সিজারের পর যেহেতু একজন মায়ের বিভিন্ন রকম খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে ঠিক তেমনি কিছু কিছু খাবার অবশ্যই খেতে হবে। সিজারের পর মায়ের খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত তা জেনে নিন। সিজারের পর মাকে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। যেমন আঁশযুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। এছাড়াও সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল বেশি বেশি খেতে হবে। তার সাথে সাথে ডিম, দুধ, মাছ মুরগির মাংস ইত্যাদি জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।

শেষ কথা

আশা করছি আমার লেখা সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেয়েছে। সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় এই আর্টিকেলে আমি একজন সিজার রোগীর সকল ধরনের সুবিধা ও অসুবিধা এবং সমস্যা গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এরকম প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পেতে নিয়মিত আমার লেখা আর্টিকেল পড়ুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

দ্যা বর্ষা ওয়েব সাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url